এবার ছুটিও বেশি, ঈদযাত্রাও অন্যরকম

Passenger Voice    |    ১২:৪৯ পিএম, ২০২৪-০৪-০৮


এবার ছুটিও বেশি, ঈদযাত্রাও অন্যরকম

ওবায়দুল হক ও হাসিনা বেগম দম্পতি কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসে বসা। নিজেরা গল্প করছেন আর একটু পর পর ঘড়ি দেখছেন। মনে হচ্ছিল সময় যেন যাচ্ছেই না। পার্থক্য হচ্ছে- আগে ট্রেনের জন্য স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো, আজ উল্টো। সাড়ে ১০ টায় গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছাড়বে ট্রেনটি। ঢাকায় পৌঁছে নির্ধারিত সময়ের আগেই ট্রেনটি পেয়েছে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। যা অতীতে কমই দেখা গেছে।

ওবায়দুল-হামিনা দম্পতি বলছিলেন, এ দৃশ্য চেনা নয়। ঈদই একমাত্র উপলক্ষ্য গ্রামের বাড়ি ফেরার। প্রায় সময়ই ভোগান্তি পোহাতে হয় ট্রেন স্টেশনে। এবারের চিত্র প্রশান্তির, আনন্দের।

কমলাপুর রেল স্টেশনে সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, যাত্রীরা আসছেন। প্রবেশপথে সন্দেহভাজন হলেই করা হচ্ছে চেকিং, জিজ্ঞাসাবাদ। দেখা হচ্ছে টিকিট।

১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দেখা যায় কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস দাঁড়ানো। সময় তখন সোয়া ১০টা। ছেড়ে যাবার সময় সকাল সাড়ে ১০টা। ট্রেনটির যাত্রী ওবায়দুল হক-হাসিনা বেগম দম্পতির সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, ঢাকায় দুই ছেলে চাকরি করে। ঢাকাতেই সবাই সেটেল। খিলগাঁওয়ে থাকে। তবে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে গ্রামের বাড়ি। ঈদ মানে সেখানে একবার যেতেই হবে।

হাসিনা বেগম বলেন, এবার তো আরামই মনে হচ্ছে। সিট পাইছি, লোকজনের চাপও কম। ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাবে মনে হচ্ছে। সেটা হলে খুবই ভালো, আরামে যাওয়া যাবে।

ওবায়দুল হক বলেন, ছেলেরা চাকরি করে। ওরাও ঈদে যাবে। এক ছেলে বিদেশ যাবে। সেজন্য মূলত ঈদে বেশি করে আগ্রহ নিয়ে আসা। স্বজনরা অপেক্ষা করছে।

সকাল ১০টার কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ১৬টি ট্রেন ছেড়ে গেছে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। ২/৪ টি ট্রেন ২০ মিনিট আধা ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে গেলেও অধিকাংশ ট্রেনেই ছেড়ে গেছে নির্ধারিত সময়ে।

একই ট্রেনের যাত্রী ওমর ফারুক টুটুল। তিনি এসেছেন আরও দুই ঘণ্টা আগে। শুধু অপেক্ষা। এই অপেক্ষাকে মধুর বলতেই রাজি তিনি।

বসুন্ধরার কনজ্যুমার পণ্যের ডিস্ট্রিবিউটর গোডাউনে চাকরি করা টুটুল বলেন, বাড়িতে চার মেয়ে আর স্ত্রী। ক্ষণে ক্ষণে ফোনে কথা হচ্ছে। এবার ১৫ দিনের ছুটি পেয়েছি, বড় ছুটি। বাচ্চাদের নিয়ে অনেক পরিকল্পনা। ব্যাপক ঘুরবো, আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় যাব।

ঈদ যাত্রা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে একতা এক্সপ্রেসের ঠাকুরগাঁওয়ের যাত্রী আলামিন বলেন, মোহাম্মদপুরে একটি কলেজে পড়াশোনা করি। কলেজ বন্ধ। বাড়িতে আরও আগেই যেতাম। যুদ্ধ করে টিকিট জয় করেছি। সেই স্বস্তিটা আজ আনন্দে রূপ নিয়েছে যখন স্টেশনে এসে দেখি গন্তব্যের একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়িয়েছে যথাসময়ে। এখন ভিড় বেশি না হলে, নিরাপদে আরামে ফিরতে পারব।